সিলেট দর্শনীয় স্থান |
বাংলাদেশ অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি লিলাভূমি। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে ছড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় জেলায়। তেমনি সিলেট জেলাও একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অংশ। দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ সিলেট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ছাড়াও সিলেটে রয়েছে প্রসিদ্ধ ইতিহাস।। সিলেটে রয়েছে অনেক দর্শনীয় স্থান। এগুলোর মধ্যে নজর করাচা বাগান গুলো সুন্দর দেশি-বিদেশি পর্যটকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে। চা বাগানের পাশাপাশি সিলেটের রয়েছে বিভিন্ন ধরনের জলা বোন হাওর লালাখাল বিছানাকান্দি সহ অসংখ্য দর্শনীয় স্থান। সিলেটের বসবাসকারী বিভিন্ন আদিবাসীদের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতি। সিলেটে আদিবাসীদের মধ্যে মনিপুরী সম্প্রদায়ের মনিপুরের নাচ অনেক বিখ্যাত। তাই বলা হয় সিলেট যেমন প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং আদিবাসীদের এক এক সংস্কৃতি ভাষা নাচে গানে মেতে ওঠে ঠিক তেমনি বিভিন্ন দর্শনে স্থানসহ হচ্ছে পরান রাদিয়াল্লাহ আনহুর মাজার রয়েছে এখানে। তাই এটিও অন্যান্য পর্যটন নগরী থেকে একটু অন্যরকম একটি পর্যটন এলাকা। যেখানে একসাথে অনেক কিছুই রয়েছে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান
বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে সিলেট। সেখানে অনেক অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। কখনো উঁচু সবুজ পাহাড়ের সমারেহ সেখানে মেয়ে সাদা মেঘে ঢাকা এক বৈচিত্র রূপ। কোথাও বা স্বচ্ছ পানি, সাদা পাথরের আমারেও এবং কোথাও ঝর্ণা আবার কোথাও রয়েছে জলাবণ। প্রিয় পাঠকগণ আপনারা যারা সিলেট ভ্রমণ করবেন এবং দর্শনের স্থান সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আমাদের আজকের এই প্রতিবেদনটি সাজানো হয়েছে। আপনারা যারা চা পাতার শহর সিলেটে যেতে চাচ্ছেন তাদের মূল আকার আকর্ষণ তো চা বাগান রয়েছে সাথে রয়েছে আরও বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান। তো বন্ধুরা চলুন আমরা এখন জেনে নেই সিগারেটের সেই দর্শনীয় স্থানসমূহ।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (বিছানাকান্দি):
সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে বিছানাকান্দি। বিছানাকান্দি সিলেটের গয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। বিছানাকান্দি মূলত জাফলং ও ভোলাগঞ্জ এর মত একটি পাথর কোয়ারী।বাংলাদেশ ভারত সীমান্তের খাসিয়া পাহাড়ের অনেকগুলো ধাপ দুপাশ থেকে এসে বিছানাকান্দিতে মিলিত হয়েছে। সেই সাথে মেঘালয় পাহাড়ের খুঁজে থাকা শো উউচ্চ ঝর্ণা বিছানাকান্দির প্রকৃতিকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা।পর্যটকদের কাছে বিছানাকান্দির মূল আকর্ষণ হচ্ছে পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা সহ্যে জলধারা আর পাহাড়ে পাহাড়ে শুভ্র মেঘের উড়াউড়ি। প্রথম দেখায় আপনার মনে হবে এ যেন এক পাথরের বিছানা। স্বচ্ছ পানিতে গা এলিয়ে দিতে সে মানসিক প্রশান্তি পাবেন এই প্রশান্তি আপনাকে বিছানার কান্তি টেনে নিয়ে যাবে বারবার। এ যেন পাহাড় নদীর ঝরনা আর পাথর মিলিয়ে প্রাকৃতিক মায়া জাল বিছিয়ে রেখেছে আপনার জন্য।
সিলেট দর্শনীয় স্থান বিছানাকান্দি ভ্রমণের উপযুক্ত সময়:
বিছানাকান্দি যেকোনো সময় ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত। কিন্তু বর্ষাকালে বিছানাকান্দি ভ্রমণের জন্য আদর্শ একটি সময়ে। এই সময় চারদিকে প্রচুর পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে বিছানাকান্দির প্রকৃত সৌন্দর্য দেখতে পাওয়া যায়। বছরের অন্য সময় এখানে পাথর উত্তোলনের কারণে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সাময়িক অসুবিধা সৃষ্টি হয়।
বিছানাকান্দি যাওয়ার উপায় :
আপনি যে কোন দেশ বা যে অঞ্চল থেকেই বিছানাকান্দিতে যেতে চান না কেন আপনাকে সবার আগে আসতে হবে সিলেট বিভাগে। তারপরে বিছানাকান্দি যেতে সিলেটের সি এন জি স্টান থেকে জনপ্রতি ১৪০ টাকা এবং ১৬০ টাকায় লোকাল সিএনজিতে করে হাদার পার নামক জায়গায় যেতে হবে। সারাদিনের জন্য সিএনজি রিজার্ভ নিলে সাধারণত ভাড়া ১০০০ থেকে ১৫০০ টাকার মত লাগবে। আধার পার এসে নৌকা ঘাট থেকে নৌকা ঠিক করে বিছানা গান্ধীর মেইন পয়েন্টে যেতে পারবেন। বর্ষাকালে বিছানাকান্দি ভ্রমণে গেলে বিছানাকান্দি ও পান্থুমাইয়ের জন্য একত্রে নৌকা ভাড়া করতে পারবেন এবং সেই অনুযায়ী নৌকার মাঝে সাথে কথা বলে নিন। কেননা শুধু বিছানাকান্দি যাওয়ার জন্য নৌকা ভাড়া লাগবে ৮০০থেকে ১৫০০ টাকা আর পান্থমাই সহ নৌকা ভাড়া লাগবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা। আর অবশ্যই দামাদামি করে নৌকা ভাড়া করা ঠিক হবে। বড় ট্রলার ভাড়া করতে কোন কোন ক্ষেত্রে ২৫০০ পর্যন্ত টাকা লাগতে পারে। শীতকালে ও বর্ষাকালের আগে নদীতে পানি কম থাকে সে সময় আপনি চাইলে হার্দারপাড় থেকে হেঁটে বা বাইকে চড়ে বিছানাকান্দি যেতে পারবেন। বাইকের ক্ষেত্রে জন প্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা ভাড়া লাগবে। আপনি যে বাহনে করে যান না কেন সবার আগে দরদাম করে নিবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান( রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্ট)
বাংলাদেশের একমাত্র সয়াম্প ফরেস্ট হচ্ছে রাতারগুল। এটি বাংলাদেশের সিলেট জেলা শহর থেকে প্রায় ২৬ কিলোমিটার দূরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত। রাতারগুল বনটি প্রায় ৩০, ৩২৫ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। এই বিস্তীর্ণ এলাকার ৫০৪ জায়গায় রয়েছে বন আর বাকি জায়গায় ছোট বড় জলাশয়ে পূর্ণ। তবে বর্ষায় পুরো এলাকার দিকেই দেখতে একই রকম মনে হয়।
মূলত রাতে গোল সিলেটের "সুন্দরবন" নামে খ্যাত। রাতারগুল জলা বন বছরে চার থেকে পাঁচ মাস পানির নিচে তলিয়ে থাকে। তখন জলে ডুবে থাকা বনের কাজগুলো দেখতে সমগ্র বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটনরা এসে ভিড় জমায়। অনেক পর্যটক রাতারগুলকে বাংলাদেশের "আমাজন " হিসেবে অভিহিত করেছেন। বর্ষায় গাছের ডালে দেখা মিলে নানান প্রজাতির পাখি। আবার তখন কিছু বর্ণ প্রাণীও আশ্রয় নেয় গাছের ডালে। এছাড়া শীতকালে রাতারগুলে জলাশয় বসে হাজারো অতিথি পাখির মেলা।
রাতারগুলে যাওয়ার উপযুক্ত সময়:
সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবরের পর্যন্ত রাতারগুল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়। রাতারগুল একটি প্রাকৃতিক বন, স্থানীয় বন। এখানে হিজল, বরুণ, খরচ সমবেশ কিছু গাছ রোপন করেন। এছাড়াও এখানে চোখে পড়ে কদম, জালিবেত, অর্জুনসহ প্রায় ২৫ প্রজাতির জলসহিষ্ণু গাছপালা। ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশ বন বিভাগ রাতারগুল বনের বাসর ৪ একর জায়গাকে বন্যপ্রাণীর অভয়া শ্রম হিসেবে ঘোষণা করেন।
সিলেট থেকে রাতারগুল যাওয়ার উপায়:
সিলেট শহর থেকে রাতারগুলের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। তাই সিলেট থেকে সকালে রাধার কোলে গিয়ে বিকালের মধ্যে ফিরে আসা যায়। একসাথে কয়েকজন হলে সারাদিনের জন্য সিএনজি কিংবা লেগুনা ভাড়া করে নিতে পারেন। সারাদিনের জন্য ভাড়া ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা লাগবে। আপনি চাইলে রাতারগুলের সাথে ভোলাগঞ্জ এবং বিছানাকান্দি ঘুরে দেখতে পারবেন। সিএনজি রিজার্ভ করতে অবশ্যই দামাদামি করে নিন। রাতারগুল ঢুকতে হলে সরকারি ফি দিতে হয়। এবং জঙ্গলে ঢোকার জন্য ছেলেদের ছোট ছোট নৌকা পাবেন। একটি ছোট নৌকায় চার-পাঁচজন বসা যায়।নৌকা ভাড়া করতে হলে ৭৫০ টাকা দিতে হবে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (নাজিমগড় রিসোর্ট)
সিলেট শহর থেকে সামান্য দূরে হাদিম নগরে এক নির্জন দ্বীপ গড়ে তুলেছে নাজিমগড় রিসোর্ট। এটি সিলেটের মধ্যে একটি বিশেষ দর্শনীয় স্থান। তাদের ওই ব্যবস্থাপনায় মেঘালয় সীমান্তে লালা খালে তৈরি হয়েছে পিকনিক স্পট। দিনের বেলা লালা খালে নৌকায় বেড়ানো কিংবা পাশের খাসিয়া পড়লে ঘুরে দেখা হয়তো বা চা বাগানের সরু পথে হাটাহাটি করে বিকেল -সন্ধানে নিরিবিলি সময় কাটাতে আসে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশ ও এলাকা থেকে। এক আদর্শ অবসর যাপন কেন্দ্র এ নাজিমগড় রিসোর্ট।
সিলেট থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের রাস্তা পাড়ি দিয়েই চলে আসা যায় নাজিমগড় রিসোর্ট। সিলেট জাফলং মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই জমকালো রিসোর্ট টি। প্রায় ৬ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠেছে এই দেশের অন্যতম সুন্দর একটি রিসোর্ট। যেখানে রয়েছে প্রায় 2 শতাধিক লোকের খাওয়া দাওয়া শুভরাত্রি জাপানের সুযোগ সুবিধা। রিসেটটি সব বয়সীদের জন্যই উপযোগী।
পাহাড়ের ঢেউ দেখার দারুন একটি জায়গায় রিসোর্ট। ১৫ টি কটেজ আছে এখানে, রয়েছে রেস্টুরেন্টের হলের পদের খাবার। কিছুটা আছে বিশাল এক বাগান, সুইমিং পুল, পিকনিক ও ক্যাম্পিং স্পট। নদীতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নিজস্ব স্পিডবোট রয়েছে। স্পিডবোর্ডে চলে শাড়ি নদী হয়ে লালাখাল ভ্রমণ যে কোন পর্যটক এর জন্যই লোভনীয় অফার। লালাখালে আবার রয়েছে নাজিমগড়ের আকর্ষণীয় রেস্টুরেন্ট সূর্যোদয়, সূর্যাস্ত ও ওপারে মেঘালয় পাহাড় দেখার জন্য পাহাড়ের ওপরে ওয়াচ টাওয়ার। এমন মুগ্ধকর জায়গাটি অবশ্যই আপনার ক্লান্তি দূর করবে ও আপনার ভ্রমণকে করে তুলবে আনন্দময়।
নাজিমগড় রিসোর্টে কিভাবে যাবেন :
সিলেট থেকে মাত্র ১৫ মিনিটের রাস্তা গেলেই পাওয়া যাবে এই নাজিমগড় রিসোর্ট। সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার পথেই মহাসড়কের পাশে অবস্থিত এই রিসোর্ট টি। তাই সিলেট থেকে সব ধরনের উপায়েই আপনি নাজিমগণ রিসোর্টে পৌঁছাতে পারবেন। যেমন জৈন্তাপুর থেকে নৌকা স্পিডবোট গাড়ি যোগাযোগেও সরাসরি যাওয়া যায় এই রিসোর্টে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (জাফলং)
সিলেট জেলায় দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে জাফলং সবার এক পছন্দনীয় স্থান।জাফলং কে প্রকৃতির কন্যা হিসেবে বিবেচিত করা হয়। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ভারতের মেঘালয় সীমান্ত ঘেঁশা প্রকৃতির দানের রূপের প্রশ্রয় সাজিয়ে আছে জাফলং। পাথরের উপর দিয়ে বয়ে চলা পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ পানির ধারা ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ,উঁচু উঁচু পাহাড়ে সাদা মেঘের খেলা জাফলং কে করেছে অনন্যা, অতুলনীয়।একক ঋতুর সময় জাফলং দেখা যায় এক একরূপে।যেন মৃত্যুর সাথে সাথে পালা বদল করে তার রূপের প্রকাশ ঘটায়। যা পর্যটকদের ভ্রমণের জন্য সারা বছরই আগ্রহী করে তোলে।
সিলেট থেকে জাফলং যাওয়ার উপায়:
সিলেট থেকে জাফলং এর দূরত্ব প্রায় ৬০ কিলোমিটার। সিলেট থেকে সরাসরি জাফলং যেতে সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘন্টা থেকে ২ ঘন্টা। বাস সিএনজি লেগুনা কিংবা মাইক্রোবাসের জাফলং যেতে পারবেন। জাফলং গামে বাস সাড়ে কদমতলী থেকে। লোকাল বাস ভাড়া জনপ্রতিস ৬০ টাকা এবং কেটলক বিরতিহীন বাস ভাড়া ১০০ টাকা করে। তাই আপনি আপনার সুবিধা মত চাইলেই সিলেট শহরে সবহানিঘাট থেকেও বাসে উঠতে পারবেন। বাসারাও জাফলং যাওয়ার লোকাল লেগুনা সার্ভিস রয়েছে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (ভোলাগঞ্জ)
প্রকৃতির মায়ায় মোড়ানো পোলাগঞ্জ দেশের সর্ববৃহৎ পাথর কুয়ারের অঞ্চল। সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা এটি অবস্থিত। পোলাগঞ্জ সীমান্তে প্রাকৃতিক দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ভারতের মেঘালয়ের রাজ্যের উচু উঁচু পাহাড়। সেই পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণাধারা একদিকে ধরাই নদীর পানির যোগানদাতা অন্যদিকে এই পানি প্রবাহে ভোলা গঞ্জের রূপের মূল উৎস। সবুজ পাহাড়ে ঘেরা, মেঘের হাতছানি আর বর্ষার পাহাড়ের ঢলের সাথে নেমে আসা সাদা পাথর ধোলাই নদের বুকে মিলেমিশে ভোলাগঞ্জে সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ।
তলায় নদের উচ্চ মুখের পাথর পরিবেষ্টিত জায়গা টুকু ভোলাগঞ্জ জিরো পয়েন্ট বা সাদা পাথর নামে পরিচিত। সাদা পাথর এলাকাটি দেখতে অনেকটা ব-দ্বীপের মত। ধরাই নদী বাংলাদেশের অংশে প্রবেশ করে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে ৪/৫ ঘুরে আবার মিলিত হয়েছে। গলায় নদীর পানির সাথে ভারতের খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড় থেকে প্রচুর পাথর নেমে আসে।
ভোলাগঞ্জের যাওয়ার উপযুক্ত সময়:
ভোলাগঞ্জ যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় হচ্ছে বর্ষাকাল ও তার পরবর্তী কিছু মাস। হঠাৎ জুন থেকে ডিসেম্বর মাসের যে কোন সময় ঘুরে আসতে পারেন ভোলাগঞ্জ থেকে। অন্য সময় গেলে পাথরময় সুন্দর্য দেখতে পেলেও নদীর পানি প্রবাহ তুলনামূলক কম পরিমাণে থাকে।
সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার উপায়:
সিলেট থেকে সিএনজি এবং মজুমদারি এলাকা থেকে ভোলাগঞ্জ যাওয়ার বিআরটিসি, লোকাল ও টুরিস্ট বাস পাওয়া যায়। সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা ৬ঃ০০ টা পর্যন্ত প্রতি ২০ মিনিট পরপর এইসব বা চলাচল করে।জনপ্রতিস ৭০ টাকা ভাড়ায় ভোলাগঞ্জ ০. সংলগ্ন সাদা পাথর যেতে পারবেন। লোকাল সিএনজিতে জন প্রতি ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা ভাড়ায় ভোলাগঞ্জ যেতে পারবেন। সিএনজি রিজার্ভ নিলে যাওয়া আসার ভাড়া লাগে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকা। সিলেট থেকে ভোলাগঞ্জ যেতে প্রায় এক ঘন্টা ত্রিশ মিনিটের মতো সময় লাগবে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (লোভাছড়া)
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার উত্তর-পূর্ব সীমান্ত গেজা খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে সচ্ছ এর নদী হচ্ছে লোহাছড়া। সবুজ পাহাড় আর লোভা ছড়ার স্বচ্ছ পানি এখানকার পরিবেশ কে দিয়েছে ভিন্নমাত্রার এক সৌন্দর্য। সেই সাথে আছে চালু হওয়ালোভা ছড়া চা বাগান। ১৯২৫ সালের নির্মিত পুরানো ঝুলন্ত সেতু ও খাসিয়া গ্রাম। পাহাড় নদী ও নীল আকাশের অপূর্ব মায়াজালে প্রকৃতিকে এক নৈশরিক সৌন্দর্য উপহার দিয়েছে রূপে অনন্যা লোভাছড়া।ঝুলন্ত সেতু ছাড়া লোহাচড়ায় রয়েছে প্রাকৃতিক লেক ও ঝর্ণা, খাসিয়া পল্লী, মীরাপিং শার মাজার, মুঘল রাজা রানীর পুরাকৃতি, প্রাচীন দিঘী, পাথরকুয়ারী ও বনবিভাগের সামাজিক বনায়ন।
লোহা ছাড়া যাওয়ার উপযুক্ত সময়:
বছরের যে কোন সময় লোহাচড়ায় যেতে পারবেন। বর্ষা এখানকার চা বাগান সবুজ ময় হয়ে ওঠে , আর শীতকালে পাহাড় আর কুয়াশা তৈরি করে ভিন্ন এক জগত। সকালে লোহা ছড়া চা বাগানে খরগোশ হরিনও বন মোরগের দেখা মিলে।
সিলেট থেকে লোহাছড়া যাওয়ার উপায় :
সিলেট থেকে তিনটি যানবাহনে যেমন সিএনজি অটোরিকশা ও বাসে করে কানাইঘাট উপজেলা সদরে যাওয়া যায়। সিলেট থেকে কানাইঘাট যাবার জনপ্রতি বাস ভাড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আর সিএনজি ও অটো রিকশার ভাড়া জনপ্রতি ১০০ টাকা। সিএনজি রিজার্ভ নিলে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা লাগতে পারে। কানাই ঘর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরত্বের লোহাচড়ার সড়ক ও নদী পথে যাওয়া যায়।
সিলেট দর্শনীয় স্থান {হযরত শাহজালাল (রাঃ) মাজার}
৩৬০ আউলিয়ার সিলেট নগরী 'পূর্ণভূমি' হিসেবে বিখ্যাত। সিলেটের মাটিতে যেসব পীর দরবেশের শায়িত আছেন তাদের মধ্যে হযরত শাহজালাল (রঃ)অন্যতম। আর এজন্য তাকে অলিকুল শিরো মনে বলা হয়। হযরত শাহ জালাল সকল ধর্মের মানুষের কাছে সমাদৃত ছিলেন।প্রতি বছর হযরত শাহজালাল (রা:)মাজার জিয়ারতের জন্য বিভিন্ন ধর্ম বর্ণ মানুষের ঢল দেখা যায়। এই মাজারের উত্তর দিকে একটি পুকুর রয়েছে, সেই পুকুরে শোভা বর্ধন করে আছে অসংখ্য গজার মাছ। কথিত আছে যে, হযরত শাহজালাল (রাঃ) ৩৬০ আউলিয়া নিয়ে সিলেট আসার পর গজাল মাছ নিয়ে এসেছিলেন। এসব মাছকে পুকুরে ভেসে বেড়াতে দেখে দর্শনার্থীরা আনন্দ লাভ করেন ও মাছদের খাবার খেতে দেন। শাহজালাল (রাঃ) মাজারের পাশে একটি কূপ রয়েছে এই কুপে সোনালিও রূপালী রঙের মাছ দেখা যায়। সকল ধর্ম প্রিয় মুসলমান এবং ভিন্ন ধর্মের ভ্রমণকারীরা এই মাজারেও পরিদর্শন করতে পারেন।
সিলেট থেকে শাহজালাল (রাঃ) মাজারে যাওয়ার উপায়:
সিলেটের রেলস্টেশন অথবা কদমতলী বাস স্ট্যান্ড হতে সিএনজি বা রিক্সা বা অটো রিক্সা দিয়ে সহজে মাজারে দেওয়া যায়। রিকশায় গেলে সাধারণত ভাড়া লাগে 20 থেকে ২৫ টাকার সিএনজিতে গেলে ৮০ থেকে ১০০ টাকা ভাড়া লাগবে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা)
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণার স্থানীয় নাম মায়াবী ঝর্ণা। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে ভারতের সীমান্তে অবস্থিত মায়াবী ঝর্নাতে যেতে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। বি এস এফ এর প্রহ রায় বাংলাদেশিরা সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখতে যেতে পারে।পাহাড়ের গা বেয়ে ঝর্ণার জল জমে পুকুরের মতো সৃষ্টি হয়েছে। এই ঝর্ণায় রয়েছে মোট তিনটি ধাপ। ভ্রমণ পাগল মানুষদের জন্য আদর্শ এডভেঞ্চারের জায়গা হল এই সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা। ঝরনার দ্বিতীয় ধাপে রয়েছে একটি সুরঙ্গ আর সুরঙ্গ পথের শেষে এখন পর্যন্ত অজানা। পিচ্ছিল পাথরের পথ পেরিয়ে ঝর্ণার সবগুলো দাঁত দেখতে চাইলে অবশ্যই সাহস এবং বাড়তি সতর্কতা জরুরী।
সংগ্রামপুঞ্জির ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময়:
সাধারণত বর্ষাকালে বাংলাদেশের সকল ঝরনাতে বেশি পানি দেখা মেলে, তাই বর্ষাকালের সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা দেখার উপযুক্ত সময়। জুলাই সেপ্টেম্বর মাসে এই ঝর্ণায় অনেক পানি থাকে, তবে শীত আসার সাথে সাথে পানি কমতে শুরু করে। অর্থাৎ মায়াবী ঝর্ণার দেখতে যাওয়ার ভালো সময় হচ্ছে বর্ষাকাল ও পরবর্তী কয়েক মাস।
সিলেট থেকে সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা যাওয়ার উপায়:
সিলেট থেকে সংগ্রাম পঞ্জীতে যেতে হলে আপনাকে সবার আগে জাফলং এ যেতে হবে। জাফলং জিরো পয়েন্ট থেকে মায়াবী ঝরনায় যেতে নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ে দশ মিনিট পায়ে হেঁটে যেতে হবে। পর্চা মৌসুমে নৌকা দিয়ে ঝর্ণার বেশ কাছে যাওয়া যায়। নৌকা নদী পার হতে শীতকালে জনপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা লাগবে। বর্ষায় ঝর্ণার কাছে যেটা জনপ্রতি নৌকা ভাড়া লাগবে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।
সিলেট দর্শনীয় স্থান( লাক্কাতুরা চা বাগান)
সিলেট চা বাগানের জন্য বিখ্যাত। দুটি পাতা একটি কুড়ির দেশ হিসেবে পরিচিত সিলেট জেলার চৌকি দেখি উপজেলার ওসমানী বিমানবন্দরের উত্তর প্রান্তের টিলার ওপর লাক্কাতুরা চা বাগান অবস্থিত। ন্যাশনাল টি বোর্ডের অধীনস্থ এই সরকারি চা বাগান প্রায় ১ হাজার ২৯৩ হেক্টর বা প্রায় ৩২০০একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। অসংখ্য জাগাজ ও উজানে যে পাহাড়ের গেরালা চা বাগান দেশের বৃহত্তম চা বাগান গুলোর মধ্যে অন্যতম। বছরে এই চা বাগান থেকে উৎপাদিত হয় প্রায় ৫ লক্ষ কেজি চা দেশীয় চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
এই লাক্কাতুরা বাগানের রয়েছে চায়ের ফ্যাক্টরি ও রাবার বাগান। লাক্কাতুরা চা বাগানের কাছাকাছি আছে বাংলাদেশের সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে প্রতিষ্ঠিত ছাড়া চা বাগান ও সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম।
সিলেট দর্শনের স্থান (তামাবিল)
সবুজ পাহাড় আর টিলায় ঘেরা সিলেট জেলা প্রকৃতির রূপে অনন্যা। সিলেটের সৌন্দর্যের মুগ্ধ হয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন কে সুন্দরী শ্রীভূমি আখ্যা দিয়েছিলেন। সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ ভারত সীমান্তবর্তী প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত তেমন নিয়োগ স্থানের নাম তামাবিল। সিলেটের জব লং রোড ধরে এগিয়ে যেতে থাকলে জাফলং এর ৫ কিলোমিটার পূর্বে তামা বিলে দেখা মিলবে। সিলেট জেলা থেকে তামা বিলের দূরত্ব প্রায় ৫৫ কিলোমিটার। তামাবিল মূলত বাংলাদেশের সিলেট এবং ভারতের শ্রীলং মধ্যকার সীমান্ত সড়কেরএকটি চৌকি।
তামাবিল থেকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড় ঝর্ণা সহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান দেখা যায়। তাই অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দৃশ্য বিমোহিত হতে প্রচুর দর্শনার্থী তামাবিল ঘুরতে আসে। তামা বিলে যাওয়ার পথে বাঁকে বাঁকে বিশাল পাহাড় ঝর্ণা রে এক পলক দর্শন আমাদের ভ্রমণের আগ্রহ বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।প্রকৃতির আয়োজন ও তামবিলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য আছে স্বচ্ছ পানির লেক তামাবিল জিরো পয়েন্ট ও জয়েন্ট সাহিল রিসোর্ট।
সিলেট থেকে তামাবিল যাওয়ার উপায় :
লোকাল বাসে তামাবিল যেতে চাইলে সিলেট শহরের শিবগঞ্জে আসুন সেখান থেকে জনপ্রতি আশি টাকা ভাড়ায় তামাবিল যেতে পারবেন। সিএনজি বা অটো রিক্সায় তামাবিল যেতে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা ভাড়া লাগবে। আপনি সেখানে মাইক্রোবাস ও ভাড়া পাবেন কিন্তু সারা দিনের জন্য রিজার্ভ নিতে ভাড়া নিবে ৩০০০ থেকে ৫০০০ টাকা। সিলেট নগরের যেকোন স্থান থেকে জাফলংগামী যানবাহনে তামা বিল যেতে পারবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (সিলেট শাহী ঈদগাহ)
বাংলাদেশের প্রাচীনতম ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে সিলেট শাহী ঈদগা অন্যতম। নিপুন কারুকার্যময় শাহী ইটগাটি ১৭০০ সালের দিকে মুঘল পোস্টার ফরহাদ খাঁ নির্মাণ করেন। ২২ টি সিঁড়ি মাড়িয়ে পনেরিটি গম্বু সজ্জিত শাহী ঈদগায়ের মূল চত্বরে প্রবেশ করতে হয়। সীমানা প্রাচীরের ঘেরা ঈদগাহের চারদিকে ছোট বড় ১০ টি গেইট রয়েছে। এই ঈদগাঁয়ে প্রায় দেড় লাখ মুসল্লি একসঙ্গে ঈদের নামাজ আদায় করতে পারে। শাহী ঈদ গায়ের উত্তর দিকে একটি মসজিদ আছে যা এই শাহী ঈদ গা মসজিদ নামে পরিচিত। আর মসজিদের পাশে সু উচ্চ টিলার উপর রয়েছে বন কর্মকর্তার বাংলো।ঈদ গাহের সামনে অবস্থিত বিশাল পুকুরে মুসল্লিরা ওযু করে থাকেন। এছাড়া দক্ষিণ দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট কেন্দ্র এবং পূর্ব দিকে হযরত শাহজালাল (রাঃ) আনহু এর সফল সঙ্গী হযরত শাহ মীরারজী (রা:) এর মাজারও সিলেট আবহাওয়া অফিস রয়েছে।
বর্তমানে এস আই ঈদগা বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা প্রবাহের সাক্ষী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে এই দীর্ঘ সৈয়দ মোহাম্মদ হাদিয়া সৈয়দ মোঃ মেহেদী দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে ইংরেজি বিরোধী অভ্যুত্থানের সূচনা হয়। এছাড়াও এখানে মহাত্মা গান্ধী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকসহ অনেক জাতীয় আন্তর্জাতিক নেতা দের আগমনের ঘটনা রয়েছে। তারা নদীতে সিলেটে সকল ধরনের বড় জনসমাবেশের জন্য শাহীদ যাকে বেছে নেওয়া হতো।
সিলেট থেকে শাহী ঈদ গায়ে কিভাবে যাবেন:
সিলেট শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে রিক্সা বা সিএনজিতে করে দক্ষিণ চত্বরে অবস্থিত সিলেট শাহী ঈদগাহে যেতে পারবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (জিতু মিয়ার বাড়ি)
সিলেটের সে ঘাটে কাজির বাজার সেতুর উত্তরে ঐতিহাসিক জিতু মিয়ার বাড়ি অবস্থিত। ১ দশমিক ৩৬৫ এ করে জায়গা জুড়ে খান বাহাদুর আবু নছর মুহাম্মদ এহিয়া ওরফে জিতুমিয়া মুসলিম এই স্থানটি নির্মাণ করেন। খান বাহাদুরে আবু নজর মহাদিয়া সাব রেজিস্টার হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করলেও ১৮৯৭ থেকে ১৯০৩ সাল পর্যন্ত সিলেট পৌরসভার ভাই চেয়ারম্যান এবং অনারারী মেজিস্ট্রেট ছিলেন। তৎকালীন সময়ে যেহেতু মেয়ের পরিবারের জাঁকজমক পূর্ণ বিলাসী জীবনযাপন সিলেটে ব্যাপকভাবে আলোচিত হতো। কথিত আছে সে সময় এই বাড়ির ড্রইংরুমের তুরস্কের পাশা, রুশ তুরস্কের যুদ্ধ ব্রিটিশ রাজ পরিবারের রাজ পুরুষদের বিভিন্ন আলোক চিত্র শোভাপেতো। আর প্রতিদিন সিলেটে আগত শত শত লোক জিতু মিয়ার বাড়িতে আতিথিয়েতা গ্রহণ করতেন।
যে দুনিয়া তার জমিদারি অস্তিত্ব চিরদিনও কোন রাখার উদ্দেশ্যে ১৯২৪ সালে নিজেকে সন্তানহীন হিসেবে উল্লেখ করে। যাবতীয় সম্পত্তি ওয়াকফ করে রেখে যান। তৎকালীন জেলার প্রশাসক কেবি এরিয়া ওয়াকফ স্টেট এর মোটা ওয়াললি নিযুক্ত হন। বর্তমানে সিলেট বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার পদবীকার বলে এস্টেট এর মতাওয়ালে নিযুক্ত থাকেন।
জিতু মিয়ার বাড়িতে তার ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র ছাড়া ওকে এ্যালিওগ্রাফি করা পবিত্র কুরআন ও হাদিসের বাণী কালো টেবিলতে বৃষ্টি চেয়ারে সাজানো তৎকালীন সময়সভাপতি নজরে আসে। বর্তমানে বাড়ির ভেতরে আটটি বসত ঘরে জমিদার বংশের উত্তর ছুরিরা বসবাস করেন।
সিলেট থেকে জিতু মিয়ার বাড়িতে কিভাবে যাবেন:
সিলেট শহরের যেকোনো প্রান্ত থেকে রিক্সা বা সিএনজিতে চড়ে জিতু মিয়ার বাড়িতে যেতে পারবেন।
সিলেট দর্শনে স্থান (আলী আমজাদের ঘড়ি)
সিলেটের বিখ্যাত নদী সুরমা নদীর তীরে অবস্থিত আলী আমজাদের ঘড়ি। উনবিংশ শতকে নির্মিত সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এটি। সিলেটের কুলাউড়ার জমিদার আলী আহমদ খান 1874 খ্রিস্টাব্দে ক্বীন ব্রিজের পাশে এই ঐতিহাসিক ঘড়ি-ঘর নির্মাণ করেন। আলী আহমদ খান এর ছেলের নাম অনুসারে ঘুড়ি ঘটে আলী আমজাদের ঘড়ি নামে পরিচিতি লাভ করে। লোহার খুটির উপর ঢেউ টিন দিয়ে তৈরি বিশালাকার গম্বুজাকৃতির আলিয়ার ঘড়ির ঘরের উচ্চতা ২৬ ফুট। আর ঘড়ির দৈর্ঘ্য ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে প্রাচীন এই ঘড়ি ঘরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে ঘড়িটি সংস্কার করা হয়। সর্বশেষ ২০১১ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক মেরামতের ফলে আলিয়ানজাদের বর্তমানে চালু রয়েছে।
সিলেট থেকে আলী আমজাদের ঘড়ি দেখতে যাওয়ার উপায় :
সিলেট শহরের যেকোনো স্থান থেকে সিএনজি বা রিক্সা অথবা অটোরিকশা দিয়ে সহজেই আলী আমজাদের ঘড়ি দেখতে যাওয়া যায়। সিলেটের রেলওয়ে স্টেশন ও কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হতে আলী আমজাদের ঘড়ির মাত্র এক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। চাইলে পায়ে হেঁটে ক্বীনব্রিজ হয়ে আলিয়ামজাদের ঘুরে দেখতে যেতে পারেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (ডিবির হাওর)
ডিবির হাওর সিলেটের জয়ন্তাপুর এ বাংলাদেশ ভারত সীমান্ত ঘেষা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। সিলেট শহর থেকে ডিবির হাওরের দূরত্ব ৪২ কিলোমিটার। ইয়াম, ডিবি, হরফকাটা, কেন্দ্রে বিল নামে এখানে মোট চারটি বিল রয়েছে।বর্ষাকালের পর বিলগুলো শাপলার রাজ্যে পরিণত হয়ে যায়। তখন সমস্ত বিএল জুড়ে হাজার হাজার লাল শাপলা ছড়িয়ে থাকে। বলে হাজারো লাল শাপলা আলোকিত করে রাখে চারপাশকে। প্রকৃতির যেন আপন ইচ্ছের মাধুরীতে লাল শাপটার হাসিতে বিলগুলোকে সাজিয়ে দেয় পরম মমতায়। যেকোনো ভ্রমণপিপাসুকে এই জায়গাটি সারা জীবনটার রূপ দিয়েই মনে রাখাবে। শাপলা বিলে একটি সকালেই যথেষ্ট। ডিবির হাওর তাই শাপলা বিল নামেও সবার কাছে পরিচিত লাভ করেছে। এছাড়া এখানে প্রায় দুইশত বছরের পুরনো একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দির রয়েছে। কথিত আছে জৈন্তা রাজ্যের কোন এক রাজা কেডিবির হলে কোথাও পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়েছিল। ধারণা করা হয় তার স্মৃতির উদ্দেশ্যে এ মন্দির নির্মিত হয়েছে। এছাড়া হরফ কাটা ও ডিবি বিলের মধ্যখানে রাজা রাম সিং হে রাম সমাধিস্থল রয়েছে। শীতকালে এই হাওর জুড়ে অতিথি পাখিদের রাজত্ব শুরু হয়। তখন সাদা বক, জল ময়ূরী ও পানকৌড়ি ইত্যাদি বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির কলরবে মুখর হয়ে থাকে ডিমের হাওরের চারপাশ।
ডিবির হাওরে কখন যাবেন:
বিবির হাওরের লাল শাপলা ফুল সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর মাসে দেখতে পাওয়া যায়। নভেম্বর মায়ের সবচেয়ে ভালো সময় ডিবির হাওয়ারে ঘুরতে যাওয়া। আর শাপলা রোগ দেখতে হলে সূর্যের আলো ফোটার আগে পৌঁছাতে হবে সেখানে। খুব ভোরে হাজার হাজার শাপলা বিলের জ্বলে নিজেদের মিলে ধরে আপন সুন্দরের ঝলকানিতে।
সিলেট থেকে টিভির হাওরে কিভাবে যাবেন:
সিলেট থেকে বা সিএনজি বা অটো রিক্সা কিংবা প্রাইভেট কার ভাড়া নিয়ে জৈন্তাপুরে আসতে হবে। সারাদিনের জন্য সিএনজি চালিত অটোরিক্সার রিজার্ভ করতে ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে। জৈন্তাপুর বাজার থেকে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের বিজিবি ডিবির হাওর ক্যাম্প চোখে পড়বে। এই ক্যাম্পের পাশ দিয়ে এক কিলোমিটার দূরত্বে শাপলা বিলের অবস্থান। বাসে করে সিলেটের কদমতলী থেকে ডিবির হাওড়ে আসতে চাইলে জৈন্তাপুর বাজারে বাস থেকে না নেমে দুই কিলোমিটার সামনে ডিবির হওয়ার ক্যাম্পের সামনে নামলে গ্রামের রাস্তা ধরে মাত্র এক কিলোমিটার হাটলেই টিভির বিলে পৌঁছে যাবেন। শাপলা বিলে নৌকায় ঘুরতে চাইলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা ভাড়া লাগতে পারে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (হাকালুকি হাওর)
হাকালুকি হাওর সিলেট ও মৌলভীবাজারের পাঁচটি উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ মিঠা পানির জলাভূমি। হাকালুকি হাওর প্রায় ২৩৮টি বিল ও দশটি নদীর সমন্বয়ে গঠিত এবং বর্ষাকালে এই হাওরের আয়তন দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর। মাছের জন্য প্রসিদ্ধ হাকালুকি হাওরে শীতকালে অতিথি পাখিদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে। এছাড়াও এখানে প্রায় ১০০ প্রজাতির স্থানীয় পাখির দেখা মেলে। হাওরের বিস্তীর্ণভূমি, বিল নির্ভর মানুষের জীবনযাত্রা এবং অতিথি পাখির আহব্বানে ভ্রমণ পিয়াসীরা হাকালুকি হাওরে ছুটে আসে।
হাকালুকি হাওর ভ্রমণের সঠিক সময় :
অতিথি পাখি দেখতে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস হচ্ছে হাকালুকি হাওর ভ্রমণের আদর্শ সময়। এ সময় হাওরের চার পাশ অতিথি পাখি কোলাহলে মুখর হয়ে থাকে। আর বর্ষাকালে হাওর সমুদ্রের রূপ ধারণ করে। তাই বর্ষাকালে হাওরের মজা নিতে চাইলে জুন আগস্ট এই সময় আসতে হবে।
ঢাকায় লুকিয়ে হাওরে কিভাবে যাবেন:
হাকালকি হওয়ার যেহেতু সিলেটের মৌলভীবাজারে অবস্থিত তাই অবশ্যই আপনাকে প্রথমে মৌলভীবাজারে যেতে হবে। মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া আসতে হবে আর কুলাউড়া থেকে অটো রিক্সা বা রিক্সা ভাড়া করে সরাসরি হাওরে যাওয়া যায়। কুলাউড়া থেকে হাকালুকি হাওরে যেতে ১০০ থেকে দেড়শ টাকা অটো রিক্সা ভাড়া লাগে এবং রিক্সা ভাড়া লাগে ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মত।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (লালাখাল)
লালাখাল বিভাগীয় শহর সিলেট জৈন্তাপুর উপজেলায় অবস্থিত। সিলেট থেকে প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই লালাখাল নদী ভারতের চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। নদী, পাহাড়, বন, চা বাগান এবং নানা প্রজাতির বৃক্ষরাজি লালাখালীর ভূপ্রকৃতিকে দিয়েছে অনন্য বৈশিষ্ট্য। ভরা পূর্ণিমায় জোস্নায় ধোয়া নদী কিংবা মেঘ পাহাড় আর নদীর মিতালী দেখতে আপনাকে লালা খালে ঘুরতে আসতেই হবে। বর্ষাকালে লালা খালের পানি খুব ঘোলা থাকে তাই নভেম্বর থেকে mars অর্থাৎ শীতকাল হচ্ছে লালাখাল ভ্রমণের উপযুক্ত সময়।
লালা খালের বিভিন্ন অংশে নীল, সবুজ এবং স্বচ্ছ পানির দেখা মিলবে। চাইলে তামাবিল অংশের স্বচ্ছ পানির শাড়ি নদীর উপর দিয়েই স্পিড বোট বানকায় লালা খালে যেতে পারেন। ৪৫ মিনিটে এ যাত্রা আপনাকে লালাখালির সৌন্দর্য বাকরুদ্ধ করে রাখবে।সন্ধ্যার পর নদীতে নৌকা থাকে না তাই সন্ধ্যার মধ্যে ফিরে আসা উত্তম। রাতে লালাখালের রূপে মোহিত হতে পূর্বে প্রস্তুতি নিয়ে আসা বুদ্ধিমানের কাজ হবে
সিলেট থেকে লালাখালে কিভাবে যাবেন:
সিলেট থেকে লালাখালে যেতে হলে নগরীর ধোপাদিধীর ওসমানী শিশু উদ্যানের বা শিশু পার্কের সামনে থেকে লেগুনা, মাইক্রোবাস অথবা জাফলংগামি বাসে চড়ে শাড়ি ঘাট আসতে পারবেন। সারিঘাট সিলেট এবং জাফলং এর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত। চারিঘাট থেকে লালাখালে যাওয়ার সিএনজি চালিত অটো রিক্সা পাবেন। যদি নদী পথে লালা খালায় যেতে চান তবে এখানে ইঞ্জিন চালিত বিভিন্ন ট্রলার নৌকা ভাড়ায় পাওয়া যাবে। লালাখাল থেকে সিলেট ফিরতে রাত আটটা পর্যন্ত বাস ও লেগুনা পাবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান)
২০০৫ সালে প্রায় ২৪৩ হেক্টর জায়গা নিয়ে সিলেটে বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার রঘুনন্দন পাহাড়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে অবস্থিত ষাটটি পাহাড় ছাড়া বা ঝর্না থেকে ওই স্থানের নামকরণ করা হয় সাতছড়ি। পূর্বে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান "রঘুনন্দন হিল রিজার্ভ ফরেস্ট" নামে পরিচিত ছিল । শাশুড়ি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে রয়েছে প্রায় ১৪৫ প্রজাতির নানা জাতের গাছপালা। এছাড়া এই বনভূমিতে ৬ প্রজাতির উভচর উদ্ভিদ, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী এবং প্রায় ১৪৯ প্রজাতির পাখি রয়েছে। প্রাণীর মধ্যে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে দেখা মিলে মেছো বাঘ, ভাল্লুক, মুখ পোড়া হনুমান, শকুন, লজ্জাবতী বানর, চশমা হনুমান এবং নানা প্রজাতির সাপ।এর মধ্যে রয়েছে লাল মাথা ড্রাগন, ধনেশ ঘুঘু, টিয়া, ঈগল, ময়না ইত্যাদি।সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের চারপাশে ৯ চা বাগান, আদিবাসী ও স্থানীয় গ্রাম এবং ফসলি জমি রয়েছে।ফলে উদ্যানের আশেপাশে বসবাসকারী পরিবার গুলোর জীবনযাত্রা অনেক আগুংসই বনের সম্পদের উপর নির্ভরশীল।
সিলেট থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে কিভাবে যাবেন:
সিলেট থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে যেতে হলে আপনাকে প্রথমে যেতে হবে শায়েস্তাগঞ্জ। শায়েস্তাগঞ্জ থেকে লোকাল সিএনজিতে জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়ায় চুনারুঘাট পৌঁছে সেখান থেকে অন্য সিএনজিতে সাতছড়ি যেতেও জনপ্রতির ২০ টাকা ভাড়া লাগবে। এ ছাড়া চাইলে শায়েস্তাগণ থেকে সরাসরি সাতছড়ি পর্যন্ত সিএনজি ভাড়া করতে পারেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (ড্রিমল্যান্ড পার্ক)
ড্রিমল্যান্ড পার্ক সিলেট থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার দূরে সিলেটের জকিগঞ্জ সড়কের গোপালগঞ্জের হিলালপুর গ্রামে অবস্থিত। প্রায় ১০০ একর জায়গা জুড়ে করে ওঠায় পার্কে বিভিন্ন আকর্ষণীয় আধুনিক সব প্রাইডের পাশাপাশি রয়েছে ওয়াটার পার্কের সমস্ত আয়োজন। ড্রিমল্যান্ড পার্টিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাথে আধুনিক বিনোদনের সমন্বয় করা হয়েছে যা এই ড্রিমল্যান্ড পার্কে আগত দর্শণার্থীদের মুগ্ধ করে। সপ্তাহের ৭ দিনে ড্রিমল্যান্ড পার্ক খোলা থাকে এবং ড্রিমল্যান্ড পার্কে প্রবেশ করতে ১০০ টাকা দিয়ে প্রবেশ টিকিট সংগ্রহ করতে হয়।সপ্তাহে সাত দিন সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ৮ টা পর্যন্ত ড্রিমল্যান্ড পার্ক সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। আর ওয়াটার পার্ক খোলা হয় সকাল ১১ঃ৩০ থেকে সন্ধ্যা ৭ পর্যন্ত।
সিলেট থেকে ড্রিমল্যান্ড পার্কে কিভাবে যাবেন:
সিলেট শহর থেকে প্রাইভেট কার, সিএনজি বা অটোরিকশা ভাড়া বাড়ি রিজার্ভ নিয়ে সহজে ড্রিমল্যান্ড পার্কে আসতে পারবেন। এছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জ রোডে চলাচলকারী বাসে করে সহজে ড্রিমল্যান্ড পার্কে পৌঁছাতে পারবেন। আর সিলেটের কদমতলী পয়েন্ট থেকে লোকাল বাসে চরেও পার্কে আসতে পারবেন। সিলেট থেকে ড্রিমল্যান্ড পার্কে জিতে প্রজন প্রতি বাস ভাড়া লাগে ১২ টাকা আর রেগুনা ও সিএনজি ভাড়া যথাক্রমে ১০ও১৫ টাকা।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (জৈন্তা হিল রিসোর্ট)
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার আলুবাগান নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে জয়ন্তা হিল রিসোর্ট।প্রকৃতির অপূর্ব নিঃসর্গ দেখার পাশাপাশি মেঘালয় পাহাড়ের জলপ্রপাত দেখার জন্য পর্যটকরা ছুটে আসেন এই পাহাড়ে অবকাশ কেন্দ্রে। তাই জয়ন্তা হিল রিসোর্টে থাকা খাওয়ার সুবিধার সাথে সাথে রয়েছে পাহাড়ের সৌন্দর্য অবলোকন করার ব্যবস্থা। পাহাড়, ঝর্ণা, নদী ও সুনীল আকাশ ছাড়া অজন্তা হিল রিসোর্ট থেকে আরো চোখে পড়ে স্বচ্ছ নদীর গভীর থেকে শ্রমিকদের পাথর তুলা আনার অসাধারণ দৃশ্য। রিসোটে না থাকতে চাইলে কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই স্বপ্নপুরীতে।
জয়ন্তা হিল রিসোর্ট থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে জয়ন্তার রাজবাড়ী এবং 5 কিলোমিটার দূরত্বে জাফলং এর অবস্থান। এছাড়া জৈন্তা হিল রিসোর্ট থেকে এক কিলোমিটার দূরে তামাবিল স্থলবন্দর অবস্থিত।
ছেলে থেকে জৈন্তা হিল রিসোর্ট যাওয়ার উপায়:
সিলেটের যেকোনো স্থান থেকে জাফলং আমি অটোরিকশা বা সিএনজি ভাড়া করে গোয়েন্দা হিল রিসোর্টে যেতে পারবেন। লোকাল বাসে করে শিবগঞ্জ এসে জন প্রতি ৮০ টাকা ভাড়ায় জৈন্তা হিল রিসোর্টে যাওয়া যায়। সিএনজি বা অটোরিকশায় যেতে ভাড়া লাগে ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা। মাইক্রোবার যাওয়া আসা সহজ সারা দিনের জন্য রিজার্ভ মিলে তিন হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা ভাড়া লাগবে। দলগতভাবে গেলে মাইক্রোবাস রিজার্ভ করে গেলেই ভালো তাহলে আশেপাশের অনন্য সব জায়গায় ঘুরে দেখতে পারবেন। গাড়ি ঠিক করার সময় চালকের সাথে ভালোমতো দরদাম করে নিন এবং কি কি দেখতে চান সে সম্পর্কে জানিয়ে রাখুন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (মালিনীছড়া চা বাগান)
বাংলাদেশের সিলেট জেলায় অবস্থিত মালুনীছড়া চা বাগান উপ-মহাদেশে সবচেয়ে বড় এবং সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত চা বাগান। ১৮৫৯ সালে লর্ড হার্টসনের হাত ধরে পনেরশো একর জায়গার ওপরে এই বাগানটির যাত্রা শুরু হয়।বর্তমানে চা বাগানটি বেসরকারি তত্ত্বাবধায়নের পরিচালিত হলেও সুন্দর সময় কাটানোর জন্য পর্যটকদের কাছে পছন্দের স্থান হিসেবে সুপরিচিত পেয়েছে।চা বাগানের আদিম অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে স্বল্প দূরে অবস্থিত মালুছড়ি চা বাগানে। তবে বাগানে প্রবেশের পূর্ব অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতা এড়াতে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে নেওয়া ভালো। এখানে চায়ের পাশাপাশি কমলা এবং রাবারের চাষ শুরু করা হয়েছে।
সিলেট থেকে কিভাবে মালিনীছড়া চা বাগানে যাবেন:
সিলেট শহরের যে কোন প্রান্তে থেকে সহজেই রিক্সা অটো রিক্সা কিংবা সিএনজি ভাড়া করে মালনিছড়া চা বাগানে যেতে পারবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (হযরত শাহপরান (রাঃ) এর মাজার)
হযরত শাহপরান রাদিউল্লার মাজার সিলেট শহরের অন্যতম একটি বিখ্যাত স্থাপনা। হযরত শাহপরান( রা) ছিলেন মধ্যপ্রাচ্য হতে বাংলাদেশে আসা ইসলাম প্রচারক শাহজালালে (রা) ভাগ্নে এবং প্রধান অনুসারী। হযরত শাহজালাল (রা) এর দরগা থেকে শাহপরান (রা)এর মাজার দূরত্ব মাত্র ৮ কিলোমিটার।সিলেট শহরের পূর্বে দিকে খাদিমনগর এলাকায় বড় একটি টিলার উপর হযরত শাহ পুরান (রা)এর মাজারের অবস্থান।
লোকমুখে প্রচারিত আছে হযরত শাহপরান (রা) এর মাজার টিলার উঠার নামার জন্য তৈরি সিঁড়িটির মুঘল আমলে নির্মিত। মাজারের পশ্চিম দিকে রয়েছে মুঘল স্থপত্ত্বলিত নির্মিত একটি মসজিদ। মূল মাজারটিলা থেকে অল্প দূরত্বে রয়েছে নারী পর্যটকদের জন্য একটি ঘর, বিদেশি পর্যটকদের বিশ্রামাগার ও অজু-গোছলের জন্য একটি পুকুর। ১৩০৩ সালে হযরত শাহজালাল (রা) এর সাথে হযরত শাহপরান(রা) এ সিলেট আগমন সম্পর্কে তথ্য থাকলেও কিভাবে এবং কখনো হযরত শাহ পরানের মৃত্যুবরণ করেন তা জানা যায়নি। প্রতিদিন শত শত ভ্রমণকারী দ্বারা মাজার দর্শন সিলেট অঞ্চলে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠায় এবং ইসলামের প্রচার হযরত শাহজালাল (রা) এর অবদানয় স্পষ্ট করে তোলে।
সিলেট থেকে এই মাজারে কিভাবে যাবেন:
সিলেট শহরের যে কোন প্রান্ত থেকে রিক্সা, অটো রিক্সা কিংবা সিএনজি ভাড়া করে সহজেই হযরত শাহপরান রাঃ এর মাজার ধর্ষণে যেতে পারবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (লক্ষণছাড়া)
লক্ষণছাড়া সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলাস্থ্য পান্থমায় ঝর্ণার কাছে অবস্থিত একটি দর্শনীয় স্থান। আপনার ভ্রমণ তালিকায় যদি পান্থময় ঝর্ণা থাকে তবে পান্থমাই হতে সহজে লক্ষণ ছড়াত ঘুরে আসতে পারেন। আপনি চাইলে বিছানাকান্দি, পান্থমায় ঝর্ণা এবং লক্ষণ ছড়ায় একসাথে একদিনে ঘুরে বেড়াতে পারবেন।গ্রামের ভিতর দিয়ে ভারতীয় সীমান্ত ঘেসে মিনিট বেশে ঘাটার পর লক্ষণছাড়া পৌঁছে যাবেন। অনেকটা বিছানাকান্দির রূপের রঙিন লক্ষণ ছড়ার ভারতের ঝর্ণা থেকে সৃষ্টি পাথরের ঝিরিপথ রয়েছে। ভারতীয় সীমানায় চলাচলের জন্য তৈরি ব্রিজের নিচ দিয়ে যাওয়ার ঝিরিপট্টি দেখতে অনেক চমৎকার লাগে। আর ভরা বর্ষায় লক্ষণ ছড়ার এই সৌন্দর্য আরো অতুলনীয় হয়ে ওঠে।
সিলেট থেকে লক্ষণ ছড়ায় কিভাবে যাবেন
সিলেট থেকে লক্ষণছাড়া দুই পথে যেতে পারবেন। এক পথে সিলেট থেকে গোয়াইনঘাট হয়ে হাঁদার পার এসে নৌকা ঠিক করতে হয়। সিলেট থেকে গোয়াইনঘাট আসার সময় গোয়াইনঘাট বাজার হতে দুপুরের খাবার খেয়ে নিতে পারেন কিংবা প্রয়োজন বোধের সাথে খাবার নিতে পারেন। গোয়াইনঘাট থেকে সিএনজি দিয়ে হাজারবার এসে বিছানাকান্দি লক্ষণছাড়া এবং পান্তুমাই দেখার জন্য একসঙ্গে নৌকা ঠিক করে নিন। আবার সিলেটের আমবর খানা থেকে লোকাল বাসে বা সিএনজি রিজার্ভ করে আধার পার আসতে পারেন। বিছানাকান্দি, লক্ষণ ছড়া আর পান্থুমায় ঘুরে দেখার জন্য নৌকা ভাড়া লাগবে ১১০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। জায়গাগুলো দেখে হাজার বার ফিরে আসতে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা সময় লাগে।
সিলেট দর্শনীয় স্থান (পান্তুুমাই ঝর্ণা)
বাংলাদেশ ভারত সীমান্তবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত মেঘালয় পাহাড়ের কোল ঘেশা একটি অপূর্ব গ্রামের নাম। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের এই গ্রাম বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম গুলোর মধ্যে অন্যতম। মেঘালয় পাহাড় আর পিয়াইন নদীর পাড়ে অবস্থিত এই গ্রামেই আছে প্রকৃতির আরেক অপরূপ নিদর্শন পান্থমায় ঝর্ণা। স্থানীয় মানুষের কাছে পান্তুমার ঝর্ণা বিভিন্ন নামে পরিচিত। কেউ একে বলে "ফাটাছুরির" ঝর্ণা আবার কিউবা ডাকেন "বড় হিল ঝরনা" আবার কারো চোখে এটি "মায়াবতী"। উচু পাহাড় থেকে পাথর বেনিমে আসা আগ্রাসী জলের ধারা কিংবা চারপাশের প্রকৃতির দিকে শুধু তাকিয়ে থাকলেও নিরাশ হবেন না কোন মতেই। মূল অবস্থান ভারতে হওয়ার পরও ১০০ টাকার ছোট ডিঙ্গি নৌকা ভাড়া করে ঝর্ণার বেশ আরো কাছে যাওয়া যায়। স্থানীয় মাঝিদের কথা মত নিরাপদ দূরত্বে থেকে অন্যান্য এই ঝর্ণার রূপ সৌন্দর্য দেখার পাশাপাশি ছবি তোলা ও ভিডিও করতে পারবেন। আর চাইলে বাংলাদেশ অংশেয় থেকে জলপ্রপাত দিয়ে নেমে আসা জলে দিতে পারেন।
পান্তুমাই ঝর্ণা দেখার উপযুক্ত সময়:
পান্থমায় ঝর্ণা দেখতে যে কোন সময় যেতে পারেন। তবে বর্ষাকাল ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়ে তখন চারদিকে প্রচুর পানি প্রবাহ থাকে।
সিলেট থেকে পান্থুমাই ঝর্ণা দেখতে কিভাবে যাবেন:
সাধারণত সকল ভ্রমণকারী এই রুটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিছানাকান্দি বাধ্য হয়ে ঝর্ণা এবং লক্ষণ ছাড়া একসাথে ঘুরে আসে শুধু পান্তুময় ঝর্ণা দেখতে চাইলে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে সেই একই পরিমাণ অর্থ দিয়ে তিনটি জায়গায় আপনি ঘুরে আসতে পারবেন। এখানে সিলেট থেকে আপনি খুব সহজেই এই জায়গাটাতে পরিদর্শনের জন্য যেতে পারবেন।
সিলেট দর্শনীয় স্থান নিয়ে আমাদের শেষ কথা:
বাংলাদেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে সিলেট। সিলেটে চা বাগান, পাহাড়, ঝরনা, রবার বাগান, নদী, হাওর সহ বিভিন্ন ধরনের দর্শনে স্থান রয়েছে। তাই অবশ্যই সিলেট আপনাকে মন মুগ্ধময় করে তুলবে। আর আপনি যদি সিলেট যাওয়ার জন্য পরিকল্পনা করতে থাকেন তাহলে অবশ্যই এর সবগুলো স্থান পরিদর্শন করার চেষ্টা করবেন। কারণ এর এক একটি স্থান আপনাকে ইয়াকুব ভাবে নতুন অভিজ্ঞতা এবং নতুন নতুন সুন্দর্য প্রকাশ করে থাকবে।যা আপনাকে মনোমুগ্ধ করে তুলবে। তাই আপনি সিলেট ভ্রমণ করলে অবশ্যই আমাদের গাইডলাইন অনুযায়ী যাতায়াত করবেন এবং নিরাপদে থাকবেন। আমাদের প্রতিবেদনটির সাথে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাদের সাথেই থাকুন ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন আসসালামু আলাইকুম।