বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস রচনা

বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবস রচনা

ভূমিকাঃ

১৯৭১ সাল হল বাংলাদেশের জীবনে অত্যন্ত স্মরণীয় একটি বছর। এই বছরেই পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের লড়াই করে বিজয় অর্জন করেছিল। ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইট এর মধ্যে দিয়ে শুরু হওয়া এই হত্যাযোগ্য শেষ হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর। তার আগে পায়খানা তার বাহিনীরা ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে অনেক মানুষ তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে। পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আমরা দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধ করে আমাদের সোনার বাংলাদেশ তাদের হাত থেকে উদ্ধার করেছল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অনেক মানুষ বিভিন্ন রকম ভাবে সাহায্য করেছিল তাদের সাধ্য অনুযায়ী। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে পালন করা হয় বাংলাদেশে। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ।

মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিঃ

১৯৪৭ সালের দেশ বিভাগের মধ্যে দিয়েই শুরু হয়েছিল এক অন্যরকম ইতিহাস। ১৯৫২ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য আন্দোলনরত ছাত্রদের বুকে গুলি চালানো হয়েছিল। এতে রফিক সালাম বরকত জব্বার সহ অনেকেই শহীদ হন। আর তার  সঙ্গে সঙ্গেই রচিত হয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি। 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যে রাতে পাকিস্তানের ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালির উপর আধুনিক যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বাংলাদেশীদের সাদি কার আন্দোলন এমনকি জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলের আইনি সঙ্গত অধিকার কেউ রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী শুরু করেছিল সারা দেশে হত্যাকাণ্ড।এবং সেই রাতের বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা ঘোষণা দেন।এবং পরবর্তীতে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পাকিস্তানে।শুরু হয়ে যায় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাস একটানা রক্তক্ষয় যুদ্ধের মাধ্যমে অবশেষে লাভ করতে সক্ষম হয়েছিল সে কাঙ্খিত বিজয়। যার মাধ্যমে আমরা হারিয়েছি অসংখ্য বুদ্ধিজীবী এবং নারী,  শিশু, সহ অসংখ্য মানুষকে।

পাকিস্তানি হানাদারদের তান্ডবঃ

স্বাধীনতা যুদ্ধে আমরা যেমন হারিয়েছি অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধাকে তেমনি হারিয়েছি শতশত দেশপ্রেমীকে বুদ্ধিজীবীকেও। দেশদ্রোহী, রাজাকার, আলিশামসদের সহায়তায় পা হানাদার বাহিনী অন্তত সুপরিকল্পিতভাবে আমাদের বর্ণ মানুষদেরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। ১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চের কাল রাত থেকে শুরু করে মুক্তিযুদ্ধের একেবারে অন্তিম মুহূর্ত পর্যন্ত তারা এই হত্যাকাণ্ড চালাতে থাকে।

শহীদ বুদ্ধিজীবী কারাঃ

১৯৭১ সালে ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশী স্বাধীনতা যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সাথে রাজাকার, আলবদর, আলসামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের নির্যাতনের পর হত্যা করে।চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে হাকাই স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাযোগ্যটি করেছিল তারা। 

বুদ্ধিজীবী বলতে আমরা বুঝতে পারছি যারা তাদের মেধা দিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিল অথবা বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তাদের মেধা কাজে লাগিয়েছিল তাদের শহীদ বুদ্ধিজীবী বলা হয়। যে ব্যক্তি শারীরিক শ্রম কাজে না লাগিয়ে তাদের মানসিক শ্রম কাজে লাগায় লাগিয়ে মানুষকে সাহায্য সহযোগিতা করে থাকে তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলা হয়।

বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পরিকল্পনাঃ

২৫ মার্চ রাতে অপারেশন সার্চ লাইট এর পরিকল্পনার সাথে একই সাথে বুদ্ধিজীবীদেরও হত্যার পরিকল্পনাও করা হয়। পাকিস্তানি সেনারা অপারেশন চালাকালীন খুঁজে খুঁজে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে থাকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে ২৫ মার্চ রাতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এ পড়ি কল্পিত অংশটি ঘটে যুদ্ধ শেষে হওয়ার মাত্র কয়েকদিন আগে। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী এবং তাদের আধা সামরিক বাহিনী আলবদর এবং আল সামসি বাহিনী একটি তালিকা তৈরি করে। যেখানে একই স্বাধীনতা কামে বুদ্ধিজীবীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। 

ধারণা করা হয় পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষে এর কাজের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। কারণ স্বাধীনতার পর ধ্বংসপ্রাপ্ত বঙ্গভবন থেকে সহ হস্তে লিখিত ডাইরি পাওয়া যায় যাতে অনেক মৃত জীবিত বুদ্ধিজীবীর নাম পাওয়া যায়। এছাড়া শাসনামলে তথ্য সচিব আলতাফ গহরের এক সাক্ষাৎকারে জানা যায় যে ফরমান আলীর তালিকায় তার বন্ধু কোভিদ সানাউল হকের নাম ছিল।

১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডঃ

দীর্ঘ নয়মায় যুদ্ধ করার পরে পাক হানাদার বাহিনীরা বুঝতে পেরেছিল যে তাদের বাংলাদেশ সময় শেষ হতে চলেছে। তখন তারা পরিকল্পনা করে বাংলাদেশকে একেবারে মেধাশূন্য করে দেওয়ার। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা বাংলাদেশের যত বুদ্ধিজীবী অর্থাৎ যত জ্ঞানীগুণী ব্যক্তি রয়েছে সবাইকে তালিকাভুক্ত করে এবং নির্মমভাবে নির্বিচারে হত্যা করে। 

টাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ড চালায় তারা পরিকল্পনা এবং তালিকা করেছিল কাদের হত্যা করবে। তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে সাহায্য নিয়েছিল বাংলাদেশে থাকায় স্বাধীনতা বিরোধী কিছু সংগঠনের যেমন রাজাকার।

মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের অবদানঃ

যে সব ব্যক্তি তাদের জ্ঞান দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সহযোগিতা করেছিল তাদেরকে বুদ্ধিজীবী বলা হয়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন অবস্থায় বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন রকম ভাবে সাহায্য সহযোগিতা করেছিল। মুক্তিযোদ্ধারা ময়দানে লড়াই করেছিল আবার কোন ব্যক্তি রয়েছে যারা তাদের বুদ্ধি খাটিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্যে সহযোগিতা করেছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। যদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বুদ্ধিজীবীদের কোন অবদান না থাকতো তাহলে তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় কখনো লেখা থাকত না। তারা বিভিন্ন রকম ভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাহায্য সহযোগিতা করেছিল। তাদের মধ্যে ছিল সাংবাদিক, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, প্রফেসর, শিক্ষাবিদ, জ্ঞানীগুণী মানুষজন। 

মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন রকম ভাবে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করেছিল এবং মুক্তিযুদ্ধের পরেও তারা থাকলে বাংলাদেশ আরও বেশি এগিয়ে যেত এবং উন্নত হতো। কিন্তু পাক হানাদার বাহিনীরা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার আগেই এবং আত্মসমর্পণ করার আগেই বাংলাদেশকে একেবারে মেধাশূন্য করে দিয়ে তারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে দেয়। যার ফলে বাংলাদেশ মেধা দিয়ে অনেকটা ভেঙে পড়েছিল।

বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পর্যায়ঃ

১৯৭১ এর বুদ্ধিজীবী হত্যাকে দুটি পর্বে ভাগ করা যায়। প্রথম পর্ব ১৯৭১ এর ২৫ শে মার্চ থেকে ৩০ শে নভেম্বর পর্যন্ত। এবং দ্বিতীয় পর্ব ১ ডিসেম্বরের থেকে ১৬ই ডিসেম্বর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত। 

প্রথম পর্বের হত্যাকান্ড:

প্রথম পর্বের যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের  শিক্ষক এম মনিরুজ্জামান, ড.গোবিন্দচন্দ্র দেব, অধ্যাপক জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুর,অধ্যাপক সুখরঞ্জন সমাদ্দার, সুরসাধক আলতাফ মাহমুদ, ভাষা সৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা, সাধনা ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডাক্তার জজ্ঞেশ চন্দ্র ঘোষ, কোন্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ নতুন চন্দ্র সিংহ প্রমুখ। সাংবাদিক মেরুন্নেসা , সেলিনা পারভীন, শহীদ সাবের প্রমুখ রাও এই রাতে নিহিত হন। 

দ্বিতীয় পর্বের হত্যাকান্ড:

দ্বিতীয় পর্বের নিষোধ সম্ম হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়ে ছিল আল বদর বাহিনীরা। এ পর্বে যাদের হত্যা করা হয় তাদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলেন -ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান ও বিশিষ্ট নাট্যকার অধ্যাপক মনির চৌধুরী, অধ্যাপক আনোয়ার পাশা, অধ্যাপক মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, অধ্যাপক রাশিদুল হাসান, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য, অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।

তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মরত ছিলেন। সাংবাদিকদের মধ্যে শহীদুল্লাহ কায়সার, সিরাজ উদ্দিন হোসেন, নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফা প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।এছাড়াও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বিভিন্ন পেশার বিশিষ্টজনদের। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর অনেক বুদ্ধিজীবির লাশ পাওয়া যায় মিরপুর ওর রায়ের বাজার বদ্ধভূমিতে।

বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে সক্রিয় ব্যক্তিবর্গঃ

বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডে সবচেয়ে সক্রিয় ছিলেন -ব্রি. জে. আসলাম,ক্যাপ্টেন তারেক, কর্নেল তাজ, কর্নেল তাহের, ভিসি প্রফেসর ড:মোহর আলি, আল বদরের এবিএম খালেক মজুমদার,আশরাফুজ্জামান ও চৌধুরী মঈনুদ্দিন। এদের নেতৃত্ব দেন মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী।

শহিদ বুদ্ধিজীবীদের হত্যার তালিকাঃ

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ২৫ শে মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যে সকল বুদ্ধিজীবীরা এবং দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের একটি তালিকা নিচে উল্লেখ করা হলোঃ

  • শিক্ষাবিদ -৯৯১ জন।
  • সাংবাদিক -১৩ জন।
  • চিকিৎসক -৪৯ জন।
  • আইনজীবী -৪২ জন।
  • অনন্য        -১৬ জন।
  • সর্বমোট - ১১১১ জন।

বুদ্ধিজীবী দিবসের প্রেক্ষাপটঃ

১৯৭১ সালে যুদ্ধকালীন সময়ে যে সকল শিক্ষক চিকিৎসক সাংবাদিক রাজনৈতিক বিদদের হত্যা করা হয়েছিল তাদেরকেই শহীদ বুদ্ধিজীবী বলা হয়। ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের উপর নিকট আত্মীয়র মিরপুর ও রাজারবাগ বদ্ধভূমিতে স্বজনদের মৃতদেহ সনাক্ত করেন। অনেকের দেহে আঘাতের চিহ্ন,  চোখ- হাত-পা বাঁধা, কারো কারো শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন দেখা যায়। অনেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল। পাতার পূর্বে যে তাদেরকে নির্যাতন করা হয়েছিল সে তত্ত্ব বের হয়ে আসে। ১৯৭২ সালের বাংলাদেশের জাতীয়ভাবে প্রকাশিত বুদ্ধিজীবী দিবসের সংকলন, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ ও আন্তর্জাতিকের সংবাদ সাময়িক নিউজ ইকে এর সাংবাদিক নিকোলাস আলিমের রচিত নিবন্ধ থেকে জানা যায় যে নিহত শহীদ বুদ্ধিজীবীদের সংখ্যা মোট ১হাজার ৭০ জন।১৯৭১ সালে ডিসেম্বরের ১৮ই মহান্তরে ২৯ তারিখে বেসরকারিভাবে গঠিত বুদ্ধিজীবী নিধন তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। এরপর বুদ্ধিজীবি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয় রাও ফরমান আলী এদেশের ২০ বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল।বুদ্ধি জীবিতদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন -এরা নির্ভুল ভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্র মনস্ক বুদ্ধিজীবীদের কে বাছাই করে আঘাত হেনেছে।তবে ১৯৭২ সালে ৩০ শে জানুয়ারি জহির রায়হানও নিখোঁজ হন। 

সকল তদন্ত করার পরে 1997 সালের 24 শে সেপ্টেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনার রমনা থানায় প্রথম মামলা দায়ের করা হয়। সেখানে আল বদর বাহিনীর চৌধুরী মাইনুদ্দিন ও আশরাফুজ্জামানকে আসামি করা হয়। মামলাটির দায়ের করেন অধ্যাপক গিয়াস উদ্দিন এর বন ফরিদা বানু।

বুদ্ধিজীবী দিবস ঘোষণাঃ

১৯৭১ সালে এ বছরব্যাপী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী।১৪ ডিসেম্বর এ সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ও বুদ্ধিজীবী হত্যা করা হয়েছিল। বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাইজুদ্দিন আহমেদের এই দিনটিকে "শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস" হিসেবে ঘোষণা করেন। তারপর থেকেই ১৪ ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়।

শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধঃ

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহিত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। স্মৃতিসৌধ টির স্ত্রপতি হলেন মোঃ আলী কুদ্দুস। ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়ের বাজারের শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা শুরু হয়। যে টিউনি ১৯৯৯ সালের ১৪ই ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। সেই স্মৃতি শুধুটির নকশা করেন যে আমি আল সাফি ও ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। বাংলাদেশের ডাক বিভাগ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে একটি স্মারক ডাক টিকিটের ধারাবাহিক প্রকাশ করেছে।

১৪ ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবস পালনঃ

১৯৭১ সালে খুবই জঘন্যতম একটি কর্মকান্ড হচ্ছে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা অতি পরিকল্পিতভাবে এই হত্যাকাণ্ড টি চালিয়েছিল। এবং এরই জন্য তাহাজউদ্দিন আহমেদ ১৪ ই ডিসেম্বর দিনটিকে বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এবং তারপর থেকে প্রতিটি ১৪ ই ডিসেম্বর সবাই পালন করে থাকে। সেদিন বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনার জন্য সকলেই নীরবতা পালন করেন। স্কুলে উঠানো হয় শোকের পতাকা এবং পালন করা হয় নীরবতা। তাদের মাগফিরাত কামনার জন্য।

উপসংহারঃ

বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান। তারা আমি তোর পূর্ব পর্যন্ত দেশের জন্য কাজ করে গেছেন। দেশের মানুষের অধিকার আদায়ে তারা নিজেদের অবস্থানে ছিলেন অটল। দেশের জন্য দাগের মহা আদর্শ স্থাপন করে গেছেন তারা। সেই আদর্শ অনুযায়ী আমরা নিজেদের যোগ্য মানুষ রূপে গড়ে তোলার চেষ্টা করব। তবে আমাদের পক্ষে তাদের ঋণ করা সম্ভব হবে। চেষ্টা করব তাদের মত উচ্চ শিক্ষিত জ্ঞানী হওয়ার এবং নিজের দেশকে প্রাণ ভরে ভালোবাসার জন্য এবং রক্ষা করার জন্য। এই হোক আমাদের আগামী বাংলাদেশের অঙ্গীকার।

হাবিবা আফরিন

আমার নাম হবিনা আফরিন । ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি আমার শখ। sorolmanus.com আমার সেই শখ পুরণে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। আশা করছি আমার লেখার মাধ্যমে আপনারা উপকৃত হবেন। সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post

Ads

Ads