অনলাইনে ইনকাম করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন নিশ্চয়ই? আমি আজকে আপনাকে কিছু আনকমন অনলাইন ইনকাম করার পদ্ধতি সম্পর্কে বলবো। আপনি অনলাইনে আমার দেওয়া আইডিয়া গুলোর মত আইডিয়া নাও পেতে পারেন। চেষ্টা করব ট্রেন্ডিংয়ে আছে কিন্তু ইউনিক কিছু আইডিয়া আপনার সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।
সবার আগে বেসিক কিছু বিষয়ে আলোচনা করার জরুরী। যারা একদমই নতুন, অনলাইনে আদৌ ইনকাম করা যায় কিনা এ সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে তাদের জন্য কিছু আলোচনা জরুরী।
অনলাইনে ইনকাম বলতে কী বোঝায়?
তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতিকেই আমরা বলব অনলাইনে টাকা ইনকাম করার পদ্ধতি। যেমন- ভিডিও তৈরি করে অনলাইনে আপলোড করা, গ্রাফিক্স ডিজাইন করে অনলাইনে বিক্রি করা, ডিজিটাল মার্কেটিং করে ইনকাম করা ইত্যাদি।
অনলাইনে ইনকাম করার হাজার হাজার পদ্ধতি রয়েছে। তবে একজন মানুষ যদি একটি পদ্ধতি ভালোভাবে আয়ত্ত করে নিয়মিত অধ্যবসই করে কাজ করে যায় তাহলে সেখান থেকে প্রচুর ইনকাম করার সুযোগ আছে।
আপনি কি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারবেন?
অনেকের মনে প্রশ্ন আমি কি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে পারব? এটার উত্তর আসলে আপনার কাছেই রয়েছে। অনলাইনে ইনকাম করতে হলে আপনাকে প্রচুর দক্ষ হতে হবে। পাশাপাশি প্রচুর ধৈর্য থাকতে হবে। সাধারণত আমরা চাকরি-বাকরি অথবা ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কাজের সাথে সাথে পারিশ্রমিক ভাই। কিন্তু অনলাইনে অনেক ক্ষেত্রে কাজের সাথে সাথে টাকা পাওয়া যায় না। প্রচুর সময় ব্যয় করতে হয় । বলা যায় একটা নির্দিষ্ট সময় বিনা পারিশ্রমিকে শ্রম বিনিয়োগ করতে হয়।
কিন্তু একটা সময় পড়ে এখান থেকে যে পরিমাণ আসে সেটা সাধারণ আর দশটা চাকরি অথবা ব্যবসা চেয়ে ভালো। তাই যারা অনলাইনে ইনকাম করতে চান মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে যে আমি একটা নির্দিষ্ট সময়ে বিনা পারিশ্রমিকে শ্রম দিব। যদি তেমনটা করতে পারেন তবেই অনলাইনে ইনকাম করার কথা মাথায় আনবেন। অন্যথায় চাকরি অথবা ব্যবসা করাই ভালো হবে।
সবচেয়ে ভালো হয় যে কোন একটি চাকরি অথবা পেশার পাশাপাশি অনলাইনে সময় দেওয়া। অথবা যদি ছাত্র হন তাহলে পড়াশোনার পাশাপাশি অনলাইনে ইনকামের বিষয়গুলোতে সময় দেওয়া । তাহলে পড়াশোনা হবে অথবা চাকরিও হবে পাশাপাশি অনলাইনের ভিত্তি মজবুত হতে থাকবে। একটা নির্দিষ্ট সময় পর সেখান থেকে ভালো মানের ইনকাম আসা শুরু করবে।
অনলাইনে ইনকাম করার উপায়
নিচে অনলাইন থেকে ইনকাম করার কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপায় দিলাম। আশা করছি যারা অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য এগুলো উপকারে আসবে।
ফেসবুক পেইজ বিক্রি করে ইনকামঃ বর্তমানে অনলাইনে facebook কে কেন্দ্র করে ছোট ছোট উদ্যোক্ত করে উঠছে। উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়ী কার্যক্রম প্রসারের জন্য ফেসবুক পেজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সেজন্য আপনি ভালো মানের পেইজ তৈরি করে। মোটামুটি ভালো রিচ এনে দিয়ে সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।
একটা ভালো মানের পেজ পাশাপাশি সেটাতে যদি ভালো এনগেজমেন্ট থাকে অর্থাৎ যদি ভালো ফ্যান ফলোয়ার থাকে তাহলে সেটা ভালো দামে বিক্রি করা যায়। এর জন্য এই বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
ওয়েবসাইট ল্যান্ডিং পেজ তৈরি করে ইনকামঃ ফেসবুকে যারা ব্যবসা করে তারা ল্যান্ডিং পেইজ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখে। যে কোন প্রোডাক্ট ক্রেতার কাছে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করার জন্য অনলাইনের যত পদ্ধতি রয়েছে তার মধ্যে ল্যান্ডিং পেজ অনেক অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এই ল্যান্ডিং পেজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে মার্কেটে। ল্যান্ডিং পেজের ডিজাইনের কাজ শেখার জন্য আপনাকে ওয়েব ডিজাইন এর কাজ শিখতে হবে। মোটামুটি ওয়েব ডিজাইনের কাজ শিখতে পারলেই ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইনের কাজটি আপনার আয়ত্তে চলে আসবে।
যে হারে অনলাইন উদ্যোক্তা বৃদ্ধি পাচ্ছে সেই হিসেবে এই মার্কেটে এখনো প্রচুর গ্যাপ রয়েছে। এই গ্যাপ টাকে কাজে লাগিয়ে অনলাইনে ইনকামের পথ সুগম করতে পারেন।
ইউটিউব চ্যানেল অপটিমাইজেশনঃ ইউটিউব চ্যানেল হচ্ছে কোন একটি চ্যানেল তৈরি করে সেটাকে পরিপূর্ণ প্রফেশনাল ভাবে সেটআপ করা। প্রফেশনাল সেটআপ বলতে উক্ত চ্যানেলের ব্যানার তৈরি করা, লোগো তৈরি করা, কিওয়ার্ড রিচার্জ করা, , হ্যাশ ট্যাগ নির্বাচন করা টাইটেল এবং ডেসক্রিপশন বাছাই করা ইত্যাদি।
অনলাইনে এ কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। অনলাইনে ছোট ছোট উদ্যোক্তাগণ তাদের ব্যবসাকে প্রচার করার জন্য ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা করে থাকেন। তাদের ব্যবসাকে উন্নতি সাধনে যা করা প্রয়োজন তারা তা করতে রাজি। ছোট বড় ব্যবসায়ীদের, ইনফ্লুয়েন্সারদের, সেলিব্রিটিদের ইউটিউব চ্যানেল অপটিমাইজেশন করে অনলাইনে প্রচুর টাকা ইনকামের সুযোগ আছে।
ফেসবুক বুস্টিং সার্ভিসঃ অনলাইনে যারা বিজনেস করেন অথবা নতুন বিজনেস শুরু করছে তাদের ফেসবুক বুষ্টিং সার্ভিসের প্রয়োজন হয়। অনলাইন উদ্যোক্তাদের ব্যবসা ফেসবুকে প্রচার করার জন্য ফেসবুক পোস্টিং এর ব্যাপক চাহিদা আছে ।
এটিকে কাজে লাগিয়ে অনলাইন থেকে আপনিও টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এর জন্য আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং শিখতে হবে। ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটা অংশ বিশেষ হচ্ছে ফেসবুকে অ্যাড চালানো। ফেসবুকে অ্যাড চালানোর নিয়ম সঠিকভাবে শিখতে পারলে এখান থেকে ক্যারিয়ারের উন্নতি করা সম্ভব।
ভয়েস রেকর্ড করে বিক্রি করে টাকা ইনকামঃ ফেসবুক অথবা ইউটিউবে ইনফরমেশন রিলেটেড অনেক চ্যানেল বা পেজ রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অ্যানিমেশন চ্যানেল রয়েছে। যেগুলোতে আলাদা করে ভয়েস রেকর্ড করতে হয়। কিন্তু সবার ভয়েস তো আর এত সুন্দর নয়। অনেক বড় বড় ইউটিউব চ্যানেল ফেসবুক পেজ রয়েছে যারা অন্যদেরকে দিয়ে ভয়েস রেকর্ড করিয়ে নেয়।
এ ধরনের কাজের মার্কেটে যেমন ডিমান্ড রয়েছে তেমন ভালো পারিশ্রমিকও পাওয়া যায়। ভালোভাবে কিছুদিন প্র্যাকটিস করলে ভয়েস ওভারে দক্ষ হয়ে ওঠা যায়। অবসর সময়ে ভয়েস ওভার রেকর্ড করে বিক্রি করে ভালো ইনকামের সুযোগ আছে।
উপরে উল্লেখিত যে কয়েকটা বিষয় সম্পর্কে আলোচনা করলাম। এগুলো সম্পর্কে আপনার দক্ষতা যদি না থাকে তাহলে অবশ্যই আগে দক্ষতা অর্জন করে নিতে হবে। আবার অনেকেই দেখা যায় দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও কাজ পাচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে আপনাকে আর একটু মার্কেটিং সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। অনলাইনে নিজের ঢোল নিজে পেটানো শিখতে হবে।