Image-freepik |
ভিডিও এডিটিং কিভাবে শিখব এটা নিয়ে আপনারা অনেকেই ইন্টারনেটে সার্চ করেন। তাই ভাবলাম যারা ভিডিও এডিটিং শিখতে চাচ্ছেন তাদের জন্য একটা উপযুক্ত আর্টিকেল তৈরি করি।
ভিডিও এডিটিং কিভাবে শিখব এটা লিখে সার্চ করছেন তার মানে আপনি ভিডিও এডিটিং করে হয়তো টাকা ইনকাম করতে চাচ্ছেন অথবা নিজের দক্ষতা বাড়াতে চাচ্ছেন।
আপনি যদি ভিডিও এডিটিং কিভাবে করবেন এ সম্পর্কে একদমই ধারণা না রাখেন অথবা এই ফিল্ডে একদমই নতুন হন তাহলে আমি আপনাকে কিছু দিক নির্দেশনা দেব। আশা করছি এগুলো ফলো করলে আপনি খুব সহজে ভিডিও এডিটিং শিখতে পারবেন।
কেন ভিডিও এডিটিং শিখবেন
বর্তমানে অনলাইন যুগে ভিডিওর মার্কেটিং রমরমা। আপনি যে কোন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেই চোখ রাখুন না কেন সব জায়গায় এখন ভিডিও আর ভিডিও। আর এই ভিডিও কে ভিত্তি করে লক্ষ লক্ষ টাকার বিজনেস হচ্ছে। অনলাইনে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুরে বেড়াচ্ছে আপনি যদি সেগুলো ধরতে চান তাহলে ভিডিও এডিটিং শিখতে হবে।
ভিডিও এডিটিং করে আপনি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন, এছাড়া বিভিন্ন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরিও করতে পারবেন। ফেসবুক, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম , টিক টক ইত্যাদি প্লাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। এছাড়া বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির বিজনেস প্রমোট করার জন্য ভিডিও তৈরি করা হয়ে থাকে।
ভিডিও এডিটিং কিভাবে শিখবেন
ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য আমার কাছে সবচেয়ে সহজ এবং নিরাপদ সাজেশন হচ্ছে ইউটিউব ব্যবহার করা। তবে বিভিন্ন পেইড কোর্স পাওয়া যায় সেগুলো থেকেও শিখতে পারবেন। যদি আপনার কাছে টাকা পয়সা না থাকে কোর্স কেনার মত তাহলে ইউটিউবে পর্যাপ্ত পরিমাণ সোর্স আছে সেগুলো থেকেও শিখতে পারবেন।
ইউটিউব ওপেন করবেন তারপর Video editing tutorial for bigginer লিখে সার্চ করবেন । এখন আপনার সাথে সামনে অনেক ভিডিও দেখতে পাবেন। এখান থেকে দু একজনের ভিডিও দেখুন। দেখতে দেখতে যার ভিডিওটা আপনি সহজে বুঝতে পারবেন তারটাই শেষ পর্যন্ত দেখুন।
সকলের বোঝানোর ক্ষমতা একরকম নয়। অথবা সকলের কথা আপনি নাও বুঝতে পারেন। যার বোঝানোর টেকনিকটা আপনার কাছে ভালো লাগবে আপনি তার ভিডিওগুলো দেখে দেখে শিখে নিন।
বেসিক ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য বেশি সময় দিতে হয় না। আপনি যদি মনোযোগ সহকারে এক ঘন্টা ভিডিও দেখেন তাহলে বেসিক শিখতে পারবেন।
তবে এডভান্স লেভেলের ভিডিও এডিটিং শেখার জন্য আপনার প্রচুর সময় দিতে হবে। ধীরে ধীরে প্র্যাকটিস করতে করতে দক্ষতা বাড়বে।
অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের কোর্স কিনতে পাওয়া যায়। যারা বেসিক থেকে এডভান্স লেভেল এর ভিডিও এডিটিং শেখায়। ভালো একজন মেন্টরের কোর্স কিনে শিখতে পারেন।
এছাড়া বিভিন্ন ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে। তাছাড়া আপনি ব্যক্তিগতভাবে যেকোন ভিডিও এডিটরের কাছ থেকেও কাজ শিখতে পারেন। তবে প্রফেশনাল ভিডিও এডিটর প্রচুর ব্যস্ত থাকেন তাই তাদের কাছ থেকে একটা ভাবে সময় নেওয়া কষ্টসাধ্য ব্যাপার।
আমার কাছে মনে হয় ইউটিউব থেকে সবচেয়ে সহজে শেখা সম্ভব। যদি আপনার প্রবল ইচ্ছা থাকে তবেই আপনি ইউটিউব থেকে শিখতে পারবেন।
কম্পিউটারে ভিডিও এডিটিং শেখার সফটওয়্যার
বেসিক ভিডিও এডিটিং করার জন্য বেসিক সফটওয়্যার দিয়েই কাজ করা ভালো। তবে এডভান্স লেভেল এর কাজ শেখার জন্য অবশ্যই অ্যাডভান্স সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে। যদি প্রফেশনালি ভিডিও এডিটিং শিখতে চান তাহলে প্রথম থেকে অ্যাডভান্স লেভেলের সফটওয়্যার এর কাজ শেখা জরুরী। কম্পিউটার দিয়ে ভিডিও এডিটিং করার জন্য জনপ্রিয় সফটওয়্যার গুলোর মধ্যে কয়েকটি তালিকা নিচে দেওয়া হল।
- Filmora
- Adobe Premier Pro
- Final Cut Pro
- Adobe After Effect
- DaVinci Resolve
- Capcut
ভালো মানের এডিটর যারা রয়েছেন তারা এখানে যে কয়টা সফটওয়্যার দেওয়া রয়েছে সবগুলোর কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখে। তবে শেখার জন্য প্রাথমিক অবস্থায় ফিল্মমোরা অথবা প্রিমিয়ার প্রো দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। বর্তমান সময়ে Capcut ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে আপনি চাইলে এটিও ট্রাই করতে পারেন।
মোবাইলে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
বর্তমান সময়ে কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইলে ভিডিও এডিটিং এর ব্যাপক জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক বড় বড় এডিটর অথবা কনটেন্ট ক্রিয়েটররা মোবাইলে ভিডিও এডিট করে আপলোড করে লক্ষ লক্ষ টাকা ইনকাম করছে। তো আপনি যদি ভিডিও এডিটিং এর ব্যাপারে কৌতুহলী হন আর মোবাইল দিয়ে সেটা করতে চান তাহলে সেটিও করতে পারেন। নিচে মোবাইল দিয়ে ভিডিও এডিটিং করার জন্য কোন কোন সফটওয়্যার গুলো বেশি ব্যবহার হয় তার তালিকা দেওয়া হলো।
- Capcut
- Kinemaster
- Adobe Rush
- Quick
- Filmora Go
- Filmmaker Pro
উপরে উল্লেখিত এই অ্যাপ গুলো ছাড়াও আরো অনেক অ্যাপ রয়েছে যেগুলো দিয়ে আপনি মোবাইলে ভিডিও এডিট করতে পারবেন। তবে মোবাইল দিয়ে এডভান্স লেভেলের কাজ করতে চাইলে উপরে উল্লেখিত অ্যাপ গুলো যেকোনটি ব্যবহার করতে পারেন।
ভিডিও এডিটিং করে কেমন ইনকাম করা যায়
যদি আপনি ভিডিও এডিটিং করে ইনকাম করতে চান তাহলে এটার সম্ভাবনা অনেক ভালো। বর্তমানে প্রত্যেক কোম্পানি তাদের প্রচারণার জন্য ভিডিও তৈরি করে অনলাইন প্লাটফর্মে আপলোড করছে। যদি আপনি এডিটিং এর দক্ষতা আয়ত্ত করতে পারেন যেকোনো ভালো মানের প্রতিষ্ঠানে 20 থেকে 30 হাজার টাকা বেতনে চাকরি ম্যানেজ করতে পারবেন।
তাছাড়াও অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং করেও ইনকাম করা সম্ভব। বড় বড় কনটেন্ট ক্রিয়েটররা ভিডিও এডিটরদেরকে হায়ার করে কাজ করেন। সে ক্ষেত্রে আপনি বাড়িতে বসে থেকেই কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ভিডিও এডিট করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে বড় বড় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের আপনার সিভি অথবা পোর্টফোলিও দেখাতে পারেন। তারা আপনার কাছ থেকে পছন্দ করলে আপনাকে কাজ দিবে।
ফ্রিল্যান্সিং করতে চাইলে মার্কেটপ্লেস থেকে কাজ নিয়ে প্রচুর টাকা ইনকামের সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে আপনার দক্ষতার পরিচয় অনেক বেশি থাকতে হবে।
ভিডিও এডিটিং এর কম্পিউটার কনফিগারেশন
ভিডিও এডিটিং করতে হলে কি ধরনের কম্পিউটারের প্রয়োজন সেটা অনেকেই জানতে চান। প্রফেশনাল অথবা অ্যাডভান্স লেভেলের এডিটিং করতে হলে অবশ্যই একটা ভালো মানের কম্পিউটারের প্রয়োজন রয়েছে। যদি আপনি এডভান্স লেভেলের ভিডিও এডিটিং করতে চান তাহলে সফটওয়্যার ইন্সটল দেওয়ার সময় কনফিগারেশন বলে দেয় । মূলত আপডেট সফটওয়্যার গুলো ইন্সটল করতে হলে একটু ভালো কনফিগারেশন এর কম্পিউটারের প্রয়োজন রয়েছে। নিচে একটি ছবি দেওয়া হল যেটাতে বুঝতে পারবেন ভিডিও এডিট করার জন্য কি ধরনের কম্পিউটারের প্রয়োজন।
উপসংহারঃ এখন বলব যে যদি আপনি ভিডিও এডিটিং শিখতে চান তাহলে সর্বপ্রথম আপনার ইচ্ছা শক্তির প্রয়োজন। আপনি যে কোন উপায়েই শিখতে পারবেন যদি আপনার প্রবল ইচ্ছা থাকে।